Skip to main content

নিভৃতে মিলিয়ে যায় পরিবহন শ্রমিকের আতর্নাদ

সিরাজ নামের একজন বাসের হেল্পার সে তুরাগ পরিবহন বাসে চাকরি করে। তার কোনো নিয়োগপত্র নেই তাই চাকরি বলাটা মনে হয় যৌক্তিক হবে না। যা হোক দিনপ্রতি তার আয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এটি দিয়েই সে কোনোমতে সংসার চালায়। গত এক সপ্তাহ যাবত গাড়ি বন্ধ তার আয়ও বন্ধ। কিন্তু তার সংসারের খরচ কি বন্ধ রয়েছে? না কিন্তু সে কিভাবে চলছে? ধারদেনা করে, দোকান থেকে বাকি নিয়ে, অথবা অনাহারে!
আপনি জানেন কি এদেশে এমন সিরাজের সংখ্যা ৪০ লক্ষ। 
তারা প্রতিদিন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে চাঁদা দেয় ১০ টাকা করে তাদের কল্যাণের জন্য।  এতে দিনে টাকা আসে ৪ কোটি।  আর মাসে ১২০ কোটি।! বছরে চাঁদা ওঠে এক হাজার ৪৪০ কোটি।
শ্রমিক ফেডারেশন মানে কোটি কোটি টাকা। সিরাজের কাছে জানতে চেয়েছিলাম যখন গাড়ি বন্ধ থাকে তখন তারা কল্যাণের টাকা থেকে কোন সহায়তা পায় কিনা? না পায় না। এ টাকা থেকে কি অবসরে গেলে কোন সহায়তা পায়? না পায় না।
পরিবহন শ্রমিকদের অধিকাংশের লাইসেন্স নেই, শ্রমিক ফেডারেশন যদি একটি উন্নতমানের ড্রাইভিং স্কুল প্রতিষ্টা করে তাহলে কি আদায়কৃত ১ মাসের চাঁদা ১২০ কোটি টাকার চেয়ে বেশি খরচ হয়?
পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র নেই, কিন্তু এ ব্যাপারে কি ফেডারেশন কখনও কথা বলেছে? হয়ত বলেছে, আমরা শুনিনি। অথচ ব্যক্তি মালিকানাধীন সড়ক পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ তহবিল আইন, ২০০৫ এ বলা হয়েছে, “শ্রমিক” অর্থ সড়ক পরিবহনে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে the Motor Vehicles Ordinance, 1983 (Ord. No. LV of 1983) এর section 4A এর বিধান মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি, এবং ড্রাইভার, ক্লিনার, কন্ডাক্টর ও চেকার।  এ আইনের অধীনে ২০১৩ সালে গঠিত হয় সরকারি শ্রমিক কল্যাণ তহবিল। এ তহবিল থেকে দুর্ঘটনাসহ নানা সমস্যায় ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের আর্থিক সাহায্য, বার্ষিক চিকিৎসাভাতার মতো বহু সুবিধা পাওয়ার কথা। তা কি তারা পাচ্ছে? না, কারণ পরিবহন শ্রমিকরাতো চাকরি করে না, বিধান মোতাবেক তাদের নিয়োগপত্র নেই তাই এ সুবিধা পায় না। কিন্তু ফেডারেশন এ বিষয়ে তো কথা বলেনি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। সাহেব বললেন শ্রমিকদের ৩৫ শতাংশ মাদকাসক্ত। কিন্তু শ্রমিকদের ঘামের পয়সা দিয়ে আয়েশ করতে পারেন কিন্তু তাদেরকে সংশোধন করার জন্য একটি সংশোধনাগার প্রতিষ্ঠা করতে পারেননা? এতা বহু দূরের কথা যখন আপনাদের ইশারায় গাড়ি বন্ধ থাকে তখন কি তাদের ন্যূনতম মজুরি টুকু দিতে পারেন না?
পরিবহন শ্রমিকরা পড়াশোনা না জানা এক অবহেলিত শ্রেণি।  ফেডারেশনের নামে, শ্রমিক ইউনিয়নের নামে তাদের রক্ত চুষে খাচ্ছে মুষ্ঠিমেয় কিছু লোক। এসবের প্রতিবাদ করার জন্য কেউ নেই।  প্রেসক্লাবে প্রায়ই দেখি গৃহপরিচারিকাদের অধিকার আদায়, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের অধিকার আদায নিয়ে নানা সুশীল, নানা সংগঠন সোচ্চার থাকে। কিন্তু পরিবহন খাতের শ্রমিকদের নিয়ে কেউ কথা বলে না, যেন এটা একটা ট্যাবু।
আমার মনে হয় শুধু আন্দোলন করে পরিবহন শ্রমিকদের নিগৃহীত করা নয়, তাদের অধিকার নিয়েও কথা বলা উচিত। সরকারি দলে যারা নেতৃস্থানীয় আছেন তাদের উচিত শুধু একজনের উপর ভরসা করে নয় শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য আরও বেশি নেতার অংশগ্রহন প্রয়োজন।

Comments

Popular posts from this blog

Colonel Tate of the Pakistan Army addressing surrendered Pakistani troops

BANGABANDHU BRINGS KAZI NAZRUL ISLAM FROM INDIA

I THINK ITS A GREAT ACHIEVEMENT FOR BANGLADESH & BENGALI CULTURE. A LOT OF THANKS OUR LEADER FOR GIVING CITIZENSHIP OF KAZI NAZRUL ISLAM.

CREDIT OF JUSTICE SHAHABUDDIN AHMED