Skip to main content

সড়কে যাবে আর কত প্রাণ!


২০১৮  সালে এখন পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৪৭১ জন। দেশে ৩৫ লক্ষ গাড়ি, ১৯ লক্ষ চালক এবং প্রতিদিন দুর্ঘটনায় অন্তত ১২ জনের প্রাণহানি ঘটছে।
এরমধ্যে কয়েকটির কথা একটু মনে করিয়ে দেই:
১. বাসচাপা দিয়ে হত্যা করা হলো শহিদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীকে। বাস দুটি একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
২. রুপা নামক মেয়েটিকে বাসের মধ্যে ধষর্ণ করে হত্যা করে ফেলে গিয়েছিল  মধুপুরের জঙ্গলে। বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হয়েছিল মেয়েটি।
৩. উত্তরা ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছিল তুরাগ পরিবহনের বাসে। ধামরাইয়ে একটি চলন্ত বাসে ধর্ষণ করা হয় এক গামের্ন্ট শ্রমিককে (৯ এপ্রিল ২০১৮)।
৪. নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান পায়েলকে হত্যা করে হানিফ পরিবহনের বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজার।
৫. নরসিংদীতে এনা পরিবহনের সাথে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিহত  ও ১০ আহত হবার ঘটনা ঘটেছে। (২১ জুলাই ২০১৮)। এ তালিকা বড় লম্বা, দুএকটি শুধু উল্লেখ করা হলো।
এ ঘটনাগুলোর মধ্যে দেখা যায় বাসচালক ও শ্রমিকরা আগ্রাসী আচরণ প্রকাশ করছে। কিন্তু কেন? এর দায়ভার কার? এর অন্তরালের কারণই বা কি?

#পরিবহন ব্যবস্থার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান হলো সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সমিতি। এবার আসুন আলোচনাটা একটু ভিন্ন দিকে নেওয়া যাক। ঢাকা শহরের একটি লেগুনা/টেম্পু যেটি খিলগাঁও থেকে গুলিস্তানে যাতায়াত করে। এ টেম্পুর যে ড্রাইভার তিনি দিনশেষে যত কামাই করবেন তা মালিককে দিবেন, আর মালিক সেখান থেকে তাকে বেতন দিবে বিষয়টি কিন্তু এরকম না। ঢাকা শহরের সকল লোকাল বাস/টেম্পু মালিকরা তাদের গাড়িগুলোকে ড্রাইভারকে দিন চুক্তি হিসেবে দিয়ে দেয়। একটি টেম্পুর দৈনিক জমা হলো ১৪০০ টাকা। গ্যাস লাগে ১০০০ টাকা। রাস্তায় খরচ অর্থাৎ পরিবহন  শ্রমিক সমিতির চাঁদা, মালিক সমিতির চাঁদা, ও অন্যান্য চাঁদা দিতে হয় ৬০০ টাকা। এই ৩ হাজার টাকা হলো ফিক্সড খরচ। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে এ তিন হাজারের পর যে টাকা আসবে সেখান থেকে হলো ড্রাইভার ও হেল্পারের রুটিরুজি। তাই গাড়িটি যত বেশিবার আপডাউন করতে পারবে ড্রাইভারের আয় ততবেশি হ্ওয়ার কথা। কিন্তু জ্যামের কারণে তা সম্ভব হয় না। তাই যখনি রাস্তা ফাঁকা থাকে তখনি বেদম টানতে থাকে গাড়িগুলো। এটি শুধু টেম্পু না সব গাড়িগুলোর ব্যাপারেই একই কথা।

গাড়িগুলো নির্দিষ্ট বাস স্টপিজে না থামিয়ে যত্রতত্র থামায় ও যাত্রী উঠানামা করায়। এটার জন্য ড্রাইভারের  চিন্তা তার জমার টাকা উঠাতে হবে। তাই সে যত্রতত্র গাড়ি থামায় ও যাত্রী উঠায়।  এক্ষেত্রে যাত্রী হিসেবে আমাদের দায়ভার কম না।

বর্তমানে নতুন একটি ভাওতাবাজি চালু করেছে মালিকরা। সেটি হলো যাত্রীর মাথাগোণা। আপনি যাত্রী  হিসেবে উঠলেন আর এক কিমি গিয়ে আপনি নেমে গেলেন, এর মধ্যে তাদের মাথাগোণা চেক পোস্ট থাকলে আপনাকে দিতে হবে এক কিমি এর জন্য ১০টাকা আবার কখনও ১৫ টাকা ভাড়া। সরকার কিমি প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে কিন্তু এক্ষেত্রে তা মানার ব্যাপারে কোন নাম নিয়ম নেই।

গাড়িকে নিয়মিত চেকআপ করতে হয়, ইঞ্জিন, বডি, ইলেকট্রিক ব্যবস্থা ইত্যাদির। এজন্য সময় দরকার কিন্তু মালিকদের তো গাড়ি বসিয়ে রাখার মতো ধৈর্য্য নেই, তাই ভাঙাচোড়া গাড়িকেও রাস্তায় চালাচ্ছে।

ড্রাইভার নিজেও তা চায় না, কারণ গাড়ি বন্ধ থাকা মানে তার বেতন না পাওযা। অর্থাৎ গাড়িগুলো বেপরোয়া চালানো ওরাস্তায় ভাঙাচোড়া গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে ড্রাইভার যতটুকু দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী অতিলোভী মালিক শ্রেণি।

এটাত বললাম মালিকদের দোষের কথা। কিন্তু জানবেন না মালিক কারা? পত্রিকার সুবাদে ত জানলেন একজনের নাম, যিনি খালাত ভাই কাম শ্যালক। “ স্রেফ শহরের ভিতরে গণ পরিবহনগুলোর মালিকানা কাদের সেটা খুঁজে বের করলেই অনুধাবন করতে পারা যাবে। যদি খুঁজে দেখেন তো দেখতে পাবেন আন্ত:শহর গণপরিবহনগুলোর মালিক হয় কোনো আইন-শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ, নয় রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কেউ কিংবা এই উভয় পক্ষের যৌথ মালিকানায়। ফলতঃ ভিকটিমরা বিচার চাইতে গেলে উলটা হেনস্তা হতে হয়। (লুৎফুল হোসেন, ২৯,জুলাই ২০১৮, bdnews24.com)”

#মালিক সমিতি ও শ্রমিক সমিতির নামে প্রতিদিন প্রচুর টাকা চাঁদা তোলা হয়, সে চাঁদা দিয়ে কি করা হয় তা আমি জানি না।  মালিক সমিতির সদস্যরা শুধু ব্যবসা করছে কিন্তু কখনও কি তাদের ন্যূনতম দায়িত্বটুকু পালন করছেন? ড্রাইভারের লাইসেন্স  আছে কিনা, বা ড্রাইভারের প্রশিক্ষণের জন্য মালিক সমিতি কি কখনও কোন ব্যবস্থা নিয়েছে? না শ্রমিক সমিতি নিয়েছে? মালিকদের কথা একটাই তুমি বাপু কে, তোমার লাইসেন্স আছে কিনা এসবের জানা দরকার নেই। শুধু জমার টাকা নিয়মিত দিলেই হলো।

এবার আসি সরেকারের কথায়।  লাইসেন্স এর জন্য বিআরটিএ আছে। কিন্তু বিআরটিএ লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চালানোর অপরাধে এ  পযর্ন্ত কতজন ড্রাইভারকে শাস্তি দিয়েছে? রাস্তায় প্রতিনিয়ত গাড়ির কাজগপত্র পরীক্ষা করা হয়? ভালোকথা, তাহলে ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো রাস্তায় চলে কীভাবে? কোন একটা সমঝোতার মাধ্যমে চলে।  কিন্তু কার সাথে কার সমঝোতা?

পথচারী ফুটপাত দিয়ে হাঁটবেন। এটাই তো হওয়ার কথা। কিন্তু পথচারী কেন রাস্তা দিয়ে হাঁটেন? ফুটপাতে যদি শতশত দোকান থাকে তাহলে পথচারী রাস্তা ছাড়া হাঁটবে কোথায়? কিন্তু ফুটপাথ বেদখল কেন? হকারদের কি সেই  সাহস আছে পুটপাথে বসে ব্যবসা করার।! তারা লাইন ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করে। কিন্তু এ লাইন ভাড়া কে নেয় তাদেরকে আগে খুঁজে দেখুন না। ফুটপাতের হকারের লাইন ভাড়া স্থানভেদে দৈনিক ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পযর্ন্ত আছে।

সড়কও কি আমরা সঠিকভাবে ব্যবহার করছি। যখন তখন রাস্তা কাটছি। কাটুন ভালো কথা কিন্তু কাটার পর যে ঠিক করতে হয় তা ভুলে যান কীভাবে।

আমরা তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক বেশি অগ্রসর হয়েছি। ঢাকা শহরের প্রধান সড়কগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসাতে কি খুব বেশি খরচ হয়। ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার উদ্যোগ নিয়ে যদি গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ শহর পযর্ন্ত সিসি ক্যামেরা বসাতে পারেন তাহলে ঢাকায় বসাতে সমস্যা কি? খোঁজ নিয়ে দেখুন গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ পযর্ন্ত সড়কে কয়টা দুঘর্টনা ঘটে? সকল ড্রাইভাররা জানে যে সিসি ক্যামেরা মাধ্যমে তাদেরকে দেখা হচ্ছে। ব্যস সতর্কতার সাথে গাড়ি চালাচ্ছে। ঢাকার রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসান দেখুন সড়ক দুঘর্টনা ও অপরাধ অনেক কমে যাবে।

আবার আসি ড্রাইবার প্রসঙ্গে। ধরুন একজন ড্রাইবার একদিন অসুস্থ গাড়ি চালাতে পারলো না। আহলে তার কি হবে। তার বাসার খরচ  ঔষধ কে দিবে? না কেউ দিবে না। মালিকরা রক্ত চুষে ড্রাইভারদের কিন্তু তাদেরকে কোন অধিকার দিতে চায় না।  শ্রমিক সমিতিতে তারা যে টাকা চাঁদা দেয় সেখান থেকে কোন সহায়তা? না কোন কিছুই নেই। তারটা তার নিজেরই চিন্তা করতে হয়।

শ্রমিক ফেডারেশন কি জাতীয় রাজনীতির ভোটে কোন প্রভাব রাখে? শ্রমিকরা তো নিজ নিজ এলাকার ভোটার। তারা তাদের এলাকার অন্য সাধারন মানুষের মতো ভোট দেয়। তাহলে শ্রমিকদের সভাপতি মানে আপনি কে? আপনার ভাব এমন যে সরকার আপনাকে চালায় না আপনি সরকারকে চালান। সরকারের সামনে একটা ঝুঝুর ভয় রেখে দিয়ে বেকায়দায় ফেলার মতলব। সরকারকে বলি আপনি যখন বিরোধী দলে ছিলেন তখন কয়দিন শ্রমিক ফেডারেশনকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করেছে।?

তাই এসব কথা বাদ দেন, কতদিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত আইন পাশ হবে তা স্পষ্ট করে বলুন। বিচার ব্যবস্থায় দুঘর্টনা সংক্রান্ত বিচারগুলোকে দ্রুততার সাথে বিচার করার ব্যবস্থা নিন।

Comments

Popular posts from this blog

Colonel Tate of the Pakistan Army addressing surrendered Pakistani troops

CREDIT OF JUSTICE SHAHABUDDIN AHMED

Understanding of Facade cleaning

Façade is the least practiced word and also different in pronunciation. Generally, people pronounce like as Fakad but its pronounce is fasad(/fəˈsɑːd/). In the facilities industry, this word practiced more. Window Cleaning, Glass Cleaning, Rope Access Cleaning these words are interrelated with the façade.  Facade is the  exterior  side of a  building , generally, but not always, the front. The word derives from the French language, meaning “face” or “front”. The façade also known as a building envelope. The facade of a  building  is clearly the most important aspect from a design perspective, as it’s the first thing people will usually see. Glass is one of the most popular choices for the building facade particularly since the industrial revolution. Although some properties may feature facades made from metals such as stainless steel, aluminum, titanium, etc. When building façade becomes dirty needs to clean. There are a number of reasons why a ...